বিসিএস
- বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস, দেশের সরকারি চাকুরিতে যোগদানের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম। মিলিটারি অর্থাৎ আর্মি, নেভী এবং এয়ার
ফোর্সের মত সশস্ত্র বাহিনীর
চাকুরী ব্যতীত বাকি সরকারি চাকুরিগুলোই
সিভিল সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত। সিভিল সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত চাকুরিগুলোর মধ্যে দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট
ও বর্তমান পরিস্থিতিতে চাকরির গুরুত্ব ও মর্যাদা বিবেচনায়
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের নিয়োগ
তথা বিসিএস কে সবচেয়ে আকর্ষণীয়
ও চাহিদাপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিসিএসে
রয়েছে দেশ সেবার সূবর্ন
সুযোগ, সামাজিক মর্যাদা, ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা।
চাকুরি প্রত্যাশীদের মাঝে বিসিএস এর
জনপ্রিয়তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। দিন দিন বিসিএস
হয়ে উঠছে অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ।
চাকরি প্রত্যাশী তরুণ-তরুণীদের কাছে
বিসিএস যেন সোনার হরিণ।
এই প্রতিযোগিতায় নিজেকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজন
পরিকল্পনামাফিক দীর্ঘ প্রস্তুতি। যে যতো আগে
প্রস্তুতি শুরু করবে সে
ততো এগিয়ে থাকবে। আমি ৩০ বছর
আগে একজনকে চিনতাম যে হাইস্কুল থেকেই
বিসিএসের প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছিল
এবং সফল ও হয়েছিল।
৩৫/৪০ বছর আগের
দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই
তখন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
বিশেষ করে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়
গুলোতে ৩ থেক ৭/৮ বছরের সেশন
জ্যাম খুব স্বাভাবিক ছিল
যা এখন কল্পনাই করা
যায়না। তখন ৩ বছরের
অনার্স কোর্স শেষ করতে ৭
থেকে ১০/১২ বছর
লেগে যেত। সেসময় দেশে
বেসরকারি চাকুরির ও তেমন সুযোগ
ছিলনা। সবার নজর ছিল
সরকারি চাকুরির প্রতি এবং উচ্চ শিক্ষিতদের
লক্ষ্যই ছিল বিসিএস। এদিকে
পাশ করে বেরুতে বেরুতেই
বয়স শেষের পর্যায়ে। সেসময় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশন
জ্যাম ছিল সর্বোচ্চ। কিন্তু
তখন প্রতিটি বিসিএসে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
পাশ করা প্রার্থীরা উল্লেখযোগ্য
হারে নিয়োগ পেত। আমি কৃষি
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা
এক বড় ভাইকে জিজ্ঞেস
করেছিলাম এর কারন কি?
তিনি বলেছিলেন দেখ আমাদের দীর্ঘ
সেশন জ্যামে আটকে থাকতে হয়
এবং শহর থেকে বিচ্ছিন্ন
হওয়ার কারনে ইউনিভার্সিটিতে আমাদের এই দীর্ঘ সময়ে
তেমন কিছু করার ও
থাকেনা। তাই এই সময়টা
কাজে লাগানোর জন্য আমরা বিসিএসের
প্রস্তুতি নিতে থাকি। এটাই
আমাদের সাফল্যের রহস্য। এই কথগুলো এখানে
এই কারনে বললাম যে পরিকল্পনা মাফিক
দীর্ঘ প্রস্তুতি মানুষকে কিভাবে প্রতিযোগিতায় জয়ী হতে সাহায্য
করে। অধুনা যারা বিসিএস উত্তীর্ন
হয়েছে তাদের গল্পগুলো ও প্রায় একই
রকম।
আর এ কারনেই লেখা
পড়া শেষ করে চাকুরির
পরীক্ষার প্রস্তুতি নিব এই মানসিকতা
বাদ দিয়ে অন্তত গ্র্যাজুয়েশন
চলাকালীন সময়েই বিসিএসের প্রস্তুতি শুরু করা উচিত।
ইংরেজি, গণিত, বাংলা, সাধারণ বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও আইসিটি এই
সাব্জেক্টগুলো দখলে নেওয়ার চেষ্টা
করা যেতে পারে এই
সময়। এতে বিসিএস প্রিলির
জন্য যেমন ভাল প্রস্তুতি
হয়ে যাবে তেমনি তা
পরবর্তীতে ভাইভা পরিক্ষায় ও সহায়ক হবে।
আর বিসিএসের প্রস্তুতি একজন প্রার্থীকে ব্যাংক
সহ অন্যান সরকারী চাকুরির জন্য ও প্রস্তুত
করে তোলে। অনেকে চিন্তা করেন কোথা থেকে
শুরু করবেন কিভাবে শুরু করবেন। তাদের
জন্য বলব বিগত কয়েক
বছরের প্রশ্ন সল্ভ করুন, আপনার
আইডিয়া হয়ে যাবে। তাছাড়া
অনেকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে
বিসিএস প্রস্তুতিতে বিষয় ভিত্তিক সহায়তা
দিয়ে থাকেন। তাদের সহযোগিতা ও নি্তে পারেন।
পরিশেষে
বলব, পরিশ্রমের বিকল্প নেই। কঠোর পরিশ্রম
ও পরিকল্পনামাফিক প্রস্তুতিই হতে পারে আপনার
আগামীদিনের সাফল্যের চাবিকাঠি।